রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৯ অপরাহ্ন

সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়াদেশ বাতিল

সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়াদেশ বাতিল

স্বদেশ ডেস্খ:

করোনা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে ধস নামিয়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাতে। করোনার প্রদুর্ভাবের পর পরই রপ্তানি আদেশ বাতিল ও স্থগিত হতে শুরু করে। দিন যত গড়াচ্ছে সংকট ততই বাড়ছে। বর্তমানে রপ্তানি আয় তলানিতে ঠেকেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনাও বাড়ছে। কাজ না থাকায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক কারখানা। ইতোমধ্যে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি (২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) ক্রয় আদেশ বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। দুই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠির কপি অর্থ সচিবের কাছেও পাঠানো হয়েছে। খবর অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রের।

চিঠিতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সভাপতি বলেছেন, পোশাকশিল্পের মালিকরা শিল্পের ভবিষ্যৎ ও শ্রমিকদের মজুরি প্রদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বরের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এমন পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পকে সহায়তার জন্য তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধে আগের মতো সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা প্রয়োজন। মালিকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ কারখানার মজুরি দেওয়ার সক্ষমতা নেই।

নতুন করে তিন মাসের মজুরি দেওয়ার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়ার পেছনে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সভাপতি যুক্তি দিয়েছেনÑ প্রতিনিয়ত বিদেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বর্তমান ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিল করছে। এখন পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। চলতি ক্রয়াদেশের অর্থ পেতেও ছয় থেকে আট মাস সময় লেগে যেতে পারে। তা ছাড়া বর্তমানে যে ক্রয়াদেশ পাওয়া যাচ্ছে, তা সম্পন্ন করতে কারখানাগুলো চালু রাখতে হবে। এ জন্য শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সময়মতো পরিশোধ করে কাজে নিয়োজিত রাখা প্রয়োজন; কিন্তু ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার কারণে পোশাক খাত নিদারুণ আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।

বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আমাদের সময়কে বলেন, এপ্রিল, মে ও জুন মাসে ৯ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। সেখানে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হবে। তা হলে প্রায় সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি কম হবে, বাংলাদেশি অর্থে ৫৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। এজন্য শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এজন্য প্রতি মাসে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দরকার।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ২ এপ্রিল নীতিমালা জারি করে। সেখানে বলা হয়, সচল কারখানা শ্রমিকের তিন মাসের (এপ্রিল, মে ও জুন) মজুরি দিতে তহবিল থেকে ঋণ পাবে। ঋণের জন্য কোনো সুদ নেই, তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২ শতাংশ পর্যন্ত মাসুল নিতে পারবে। ঋণের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংককে দুই বছরের মধ্যে শোধ করবে ব্যাংকগুলো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877